হারা-জেতার ভালোবাসা


বড়লোক বাপের উচ্ছন্নে যাওয়া মেয়ে নিরুপমা। প্রচন্ড জেদি, বদমেজাজি সাথে আগুন ঝরা সুন্দরী। বি বি এ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। এটাও বলা যায় যে সেই তার ভার্সিটি সেরা সুন্দরীর খেতাব পেয়েছে।কিন্তু দিন দিন সে উচ্ছন্নে চলে যাচ্ছে দেখে তার বাবা মায়ের চিন্তার শেষ নেই।সারাদিন হই হুল্লোর আর আড্ডা মেরে পার করে।আর কথায় কথায় বাজি করে সবার সাথে আর বাজিটা জিতবেই জিতবে। তার মা বাবা অনেক চেষ্টা করেও তাকে বসে আনতে পারে নি।কারন তাদের একটাই মাত্র সন্তান।তাই আদর পেয়ে পেয়ে অনেক টা বেয়ারা হয়ে গেছে। আর এখন সেটা এতই বেশি যে তাদের পক্ষে তাকে কন্ট্রোল করা অসম্ভব হয়ে গেছে। তাই তার মা বাবা ঠিক করলো মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিবে।কিন্তু এই মেয়ের সম্পর্কে জানার পর কেউই তাকে বাড়ির বউ বানাতে চাইবে না।


সে এক গভীর চিন্তায় পড়লো তারা। শেষে নিরুপমার মা সাহেদা বেগম এর মনে হল তার গ্রামের বান্ধবীর কথা। ওরা গ্রামেই থাকে, তার তো একটা ছেলে আছে।আর তাকে এই অবস্থায় একমাত্র তার এই বান্ধবীই উদ্ধার করতে পারে। সাহেদা বেগম তার বান্ধবীর সাথে কথা বলে জানতে পারলো তার ছেলের লেখাপড়া প্রায় শেষ। তাইবিয়ে দিতে আপত্তি নেই তার।আর তার ছেলেও সে কথা দিলে সেটা ফেলবে না। আর ওনার নিরুপমা কে বেশ পছন্দ। তাই তিনি সাহেদা বেগম কে পাকা কথা দিলেন।


সাহেদা বেগম গ্রামে গিয়ে তার বান্ধবীকে সব বুঝাই বললো সাথে তার বান্ধবীর ছেলে কেও দেখে আসলো। ছেলে মাশাল্লাহ সুন্দর। সবদিক থেকেই পারফেক্ট কিন্তু সমস্যা ছেলে গ্রামেই লেখাপড়া করেছে তাই নিরুপমার সাথে মানিয়ে নিতে পারবে না হয়তো। ছেলে কে সব বলে নিরুপমার নাম্বার দিয়ে চলে আসে। তারা বাড়িতে ফিরে নিরুপমা কে বিয়ের কথা বলে ভার্সিটি যাওয়া অফ করতে বলে কিছুদিন। নিরুপমা তো রেগে আগুন।


এভাবে কয়েকদিন থাকার পর নিরুপমার দম প্রায় বন্ধ হয়ে আসছিল তাই সে আর পারছিল না। তাই সে তার আম্মুর কাছে জানতে চাইলো ছেলের সম্পর্কে। সব জেনে নিরুপমার চক্ষু চড়কগাছ।সে আব্বু আম্মুর মুখ চেয়ে বিয়ে করতে পারে কিন্তু একটা গাইয়া খ্যাত ছেলে কে কখনোই তার স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবে না।যে করেই হোক বিয়েটা ভাঙতে হবেই। তাই নিরুপমা ছেলেটির নাম্বার তার আম্মুর থেকে চেয়ে নিল যে সে ছেলেটির সাথে কথা বলে পরিচিত হতে চায়, বিয়ের আগে ফ্রি হতে চায় জড়তা কাটিয়ে। সাহেদা বেগম ছেলেটির নাম্বার দিয়ে দিল।


নিরুপমা রাত ১০টার দিকে ছেলেটির নাম্বার এ ফোন দিল।

নিরুপমা: হ্যালো


ছেলেটি: কে কইতেছেন?


নিরুপমা: আমি...যার সাথে আপনার বিয়ের কথা ঠিক হয়েছে।



ছেলেটি:ওহ এইটা তুমার নাম্ভার? আচ্ছা শুনো তোমারে আমার মেলা পছন্দ ওইছে।মুই তুমারেই বিয়া করিম। নিরুপমা:আপনি শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারেন না?



ছেলেটি: তুমি তো মোর বউ হবা, তুমার লগে শুদ্ধ ভাষায় কতা কয়ন যায় নাকি? এইটাই ঠিক আছে।


নিরুপমা: ডিসগাস্টিং.....এই শুনেন আমি আপনার মত একটা গেয়ো ভুত, গাইয়া, খ্যাত কে বিয়ে করবো না। আপনি সবাইকে না করে দেন।


ছেলেটি: কিন্তু আমি তো তুমাক ই বিয়া করিম। মুই তো সবাক বন্দু গুলাক কইয়া দিছি।


নিরুপমা: আপনাকে বিয়ে করবো না আমি মরে গেলেও করবো না।


ছেলেটি:তুমি মোক বিয়া করার জন্য পাগল হইয়া যাইয়া মনে রাখো। মোরে বিয়া করার লাইগা মরতেও চাইবা।


নিরুপমা: আপনি শুধু গাইয়া ভুত না আপনার মাথাতেও সমস্যা আছে...আমি একটা একটা বেকার অকমর্ণ ছেলে কে বিয়ে করতে পারবো কিন্তু আপনাকে নেভার এভার....



ছেলেটি:কিন্তু মুই তো তুমাক বিয়া করিম এইডা ফাইনাল।



নিরুপমা: অসম্ভব। আমি কখনোই আপনাকে বিয়ে করবো না।



ছেলেটি:আর যদি বিয়া করবার পারি?



নিরুপমা:যদি না পারেন?



ছেলেটি:বাজি করবেন?



নিরুপমা: করলাম, বলেন কি বাজি...


ছেলেটি:মুই তুমারে বিয়া করবার পারলে তুমি রোজ রাতে ঘুমানোর আগে আর সকালে ঘুম ভাঙার পর তুমার ভেজা চুল দিয়ে আমার পা মুছাই দিতে হবে...


নিরুপমা: ইয়াক.....আর আপনি যদি হারেন তাহলে?


ছেলেটি: তুমি যেই ছেলের লগে বিয়া করবা তার লগে বিদ্যাসে হানিমুন করতে সব টাকা মুই দিমু....


নিরুপমা: নিরুপমা খুশি হয়ে.... অকে ফাইনাল....


তারপর নিরুপমা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিল বাসায়। সে ওই গাইয়া খ্যাত কে বিয়ে করতে পারবে না। কিন্তু তার মা তার সিন্ধান্তে অটল বিয়ে তার বান্ধবীর ছেলেকেই করতে হবে। এক সপ্তাহ এভাবে চলার পর একদিন অসুস্থ হয়ে সেন্সলেস হয়ে যায় নিরুপমা  তখন নিরুপমার বাবা বিয়ে ভেঙে দেয়তার মেয়ের কথা ভেবে। নিরুপমা তো মহাখুশি সেই গাইয়ার হাত থেকে বাঁচতে পেরে… কিছুদিন বাসায় রেষ্ট নিয়ে আবার আগের মতই হয়ে গেল নিরুপমা...


বেশ মাসখানেক পর ভার্সিটি তে আসলো নিরুপমা।এসেই বান্ধবীদের সাথে আড্ডা ফাজলামিতে আবার মেতে ঊঠলো।তখনি নোটিশ করলো যে ক্যাম্পাসে একটা নতুন ছেলে একা একা বসে ষ্ট্যাডী করছে। বান্ধবীদের কে জিজ্ঞেস করলো নতুন ছেলেটি কে? বান্ধবীরা বললো নাম নিলয়, ভার্সিটিতে নতুন কিন্তু আমাদের সিনিয়র MBA করছে। কারো সাথেই তেমন মিশে না। মেয়েদের আসে পাশেও তাকে খুজে পাওয়া যায় না। প্রচন্ড লেভেলের ব্রিলিয়ান্ট & স্কলারশিপ পেয়ে MBA ভর্তি হয়েছে। সারাদিন বইয়ে মুখ গুজে থাকে এক কথায় বই পোকা কিন্তু অনেক হেল্পফুল।


মেয়েদের আসেপাশে থাকে না কেন? গে নাকি???

নিরুপমার কথা শুনে হেসে ফেললো তার সব বান্ধবীরা। রুনা হঠাত বলে উঠলো মেয়েদের সাথে মিশে না কথা টা ঠিক না আমি সেদিন আমাদের একটা সাবজেক্ট এ এসাইনমেন্ট করি নি। ওই দিন জমা দেবার শেষ দিন ছিল। আলামিন ভাইয়াকে বললাম ভাইয়া ওনাকে  দেখিয়ে দিয়ে তার কথা বলতে বললো। আমি গিয়ে আমার সমস্যার কথা বলতেই তিনি ওনার পুরোনো এসাইনমেন্ট বের করে দিল।আর কভার পেজ চেঞ্জ করে আমার নাম লাগিয়ে দিয়ে জমা দিতে বললো। আমি সেদিন ওটাই জমা দিছি। আর স্যার বললো আমার এসাইনমেন্ট টাই নাকি বেষ্ট ছিল। অনেক বাহবা দিলেন।


আসলে উনি মেয়েদের সাথে প্রেম ভালবাসা রিলেশন এগুলো থেকে দুরে থাকতে চান।উনি অনেক সহজ সরল কিনা তাই।পটানোর ধান্দা করে গেলে উনি কথা বলবে না। লেখাপড়ায় হেল্প লাগলে, ওনার সাধ্যমত সাহায্য করেন। তো কি হইছে? আমি যদি তার সাথে প্রেম করতে পারি তো কি করবি বল? নিরুপমা বললো। তুই অনেক সুন্দরী কিন্তু তাকে পটাতে পারবি না। তোর আগেও অনেক মেয়ে তার উপর ক্রাশড এবং রিজেক্ট হইছে।তাই তুই ও পারবি না সেটা সিওর.....


রুনা তুই আমাকে চিনিস না??? আমি নিরুপমা, যার উপমা নাই সেই নিরুপমা। আমার মত কেউ নাই। ওয়ান পিস।আমি পটাতে পারবো না এমন কোন ছেলে এই ক্যাম্পাসে নাই। রুনার নিরুপমার জেদ সম্পর্কে ভালই ধারনা আছে। কিন্তু নিলয় ছেলেটিকে পটাতে পারবে না সেটা সে সিওর। কারন রুনার নিলয় ছেলেটির উপর একটা কনফিডেন্স জন্মে গেছে। তাই রুনাও জেদ ধরে বসলো। রুনা বললো তুই পারবি না ওই ছেলে কে পটাতে।



নিরুপমা অনেক টা রেগে গিয়ে বললো এক সপ্তাহের মধ্যে ওই ছেলে কে পটাবো এবং এক সপ্তাহ তোদের নাকের ডগার উপর দিয়ে প্রেম করবো এবং এক সপ্তাহ পর তোদের সামনেই ওর সাথে ব্রেক আপ করবো & ও আমার হাত পা জো করবে ব্রেক আপ না করার জন্য......

বেট করবি?

রুনা ভাবলো নিরুপমা অসম্ভব কিছু বলছে তাই বেট করেই ফেললো। ৫০০০ টাকা বেট হল নিরুপমা & রুনার মধ্যে। ওকে তাহলে কাল থেকেই তোর বাজির দিন শুরু রুনা বললো..... নিরুপমা বললো, ওকে জানু টাকা টা রেডি রাখো আজ ৫ তারিখ........ ১৯ তারিখে টাকা টা পাচ্ছি...... ৭দিনে পটাবো এবং ৭দিন প্রেম......

ডান......


আজ ১২তারিখ....

নিরুপমা নিলয় নামের ছেলেটার হাত ধরে পুরো ক্যাম্পাস চষে বেড়াচ্ছে। হঠাত করে রুনাদের সামনে এসে গেছে। তাই রুনাদের সাথে নিলয়ের পরিচয় করিয়ে দিল। নিরুপমা বললো রুনা এই হল নিলয় আমার বয়ফ্রেন্ড আর নিলয় এই হল রুনা আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। নিলয় আর রুনা হ্যান্ডশেক করলো। সেদিনের মত বিদায় নিল যে যার মত। ..

...

এদিকে নতুন প্রেমে পড়ে নিলয় তো পাগল হয়ে গেছে। আসলে ক্যাম্পাস এর সেরা সুন্দরী যখন তাকে এসে বললো যে সে তাকে পছন্দ করে তখন নিলয়ের তো চাঁদ হাতে পাবার অবস্থা। তাই পরের দিন গিয়েই বলে দিয়েছিল যে নিলয় ও তাকে পছন্দ করে।সেদিন থেকেই প্রেম।নিরুপমা যে বাজি করে প্রেম করছে নিলয় বেচারা সেটা জানেই না।আর নিরুপমা ও হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে গেছে। তার মাথায় এখন একটা চিন্তা তাকে বাজি জিততে হবে। আর নিরুপমা কখনোই কোন বাজি তে হারে নি। তাই এবারো হারতে চায়না। সারা সপ্তাহ জুড়ে কপোত কপোতীর মত প্রেম চুটিয়ে প্রেম করে যাচ্ছে দুজনই…

.....

আজ ১৯তারিখ....

নিরুপমা নিলয় কে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে ঘুরতে রুনা আলামিনরা যেখানে আড্ডা দিচ্ছিল সেখানে এসে হঠাত দাড়িয়ে গিয়ে সবাইকে ডাক দিল।সবাই আসলে নিরুপমা নিলয় কে বললো নিলয় গেম অভার। নিলয় বললো মানে? তখন নিরুপমা সব খুলে বললো আর রুনা নিলয় আলামিন সবার সামনেই বাজির ৫০০০টাকা নিরুপমা কে দিয়ে দিল। নিলয়ের আকাশ ভেঙে মাথায় পড়ার অবস্থা। নিলয় নিরুপমার হাত ধরে বাচ্চা ছেলের মত কাঁদতে লাগলো। প্লিজ নিরুপমা এমন করো না তোমার বাজির টাকা টা আমি দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু নিরুপমার মায়া হল না। সে বিজয়ীনির বেশে অট্টহাসি হ দিয়ে সবার উদ্দেশ্যে বললো কিরে রুনা এই তোর সেই নিলয়।আমার কাছে এখন হাত ধরে প্রেম ভিক্ষা চাইছে। বলেই একটা অট্টহাসি দিল......


আলামিন, রুনা, প্রান্ত, মনিরা সবাই নিরুপমার এই রুপ দেখে অবাক। কিভাবে এতটা কঠিন মনের হতে পারে একটা মেয়ে। নিলয় কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো ঘাসের উপর।নিরুপমা নিলয়ের হাত থেকে হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছিল হাসি মুখেই। সবাই নিরুপমার আচরনে হতবাক.... নিরুপমা চলে যাচ্ছে.....

..

হঠাত নিরুপমা শুনতে পেল পিছনে নিলয় আর কাঁদছে না।নিলয় রুনা দুজনেই হেসে উঠছে একসাথে।নিরুপমা অবাক হয়ে ফিরে আসলো সবার কাছে।তখন দেখলো নিলয় আলামিন ভাইয়ার কাছ থেকে ২৫০০০টাকা নিচ্ছে। নিরুপমা রুনা কে জিজ্ঞেস করলো এটা কিসের টাকা। তখন আলামিন বললো, আমি বাজি করেছিলাম নিলয়ের সাথে। নিলয় বলেছিল তুমি নিজে এসে নিলয় কে প্রোপোজ করবে এবং এক সপ্তাহ প্রেম করে নিজেই ব্রেক আপ করবে। আমি বলেছিলাম নিরুপমা তোমাকে পাত্তাই দিবে না।তাই আমি ওর সাথে বাজি করেছিলাম কিন্তু আমি হেরে গেছি তুমি ওকে প্রোপোজ করে এক সপ্তাহ প্রেম করে এখন নিজেই ব্রেক আপ করছো তাই নিলয় জিতে গেছে।


নিরুপমা অবাক না হয়ে পারলো না। সে তো বাজি করছে রুনার সাথে ৫০০০ টাকা আর নিলয় সেটাই করেছে ২৫০০০ টাকা। কিভাবে? তার মানে কি রুনা??? তখন রুনা বলা শুরু করলো, বললো নিরুপমা স্যরি দোস্ত।তোর সাথে এই বাজি করার জন্য টাকা টা আমাকে নিলয় ভাইয়াই দিয়েছিল।যেদিন এসাইনমেন্ট জমা দেবার পর নিলয় ভাইয়া কে ধন্যবাদ জানাতে যাই তখন তিনি এই বাজি টা করতে বলেন আর এটাও বলেন যে বাজির টাকা উনি দিবে। তাই আমি বাজি টা করি। বাকি টা নিলয় ভাইয়ার কাছেই শুনে নে...

হচ্ছে টা কি নিলয়? নিরুপমা বললো। নিরুপমা তুমি এতটাও সুন্দরী বা চালাক নও যে আমার মত ছেলে কে এক সপ্তাহে তোমার ন্যাকামি দেখিয়ে প্রেমে ফেলতে পারবা।তুমি যেদিন আমাকে প্রথম নোটিশ করো। সেদিন আমি তোমার ব্যাপারে আলামিন এর কাছে জানতে চাই। তাতেই বেরিয়ে আসে তোমার এই ভয়ংকর রুপ টা। তাই ভাবলাম তোমাকে একটা শিক্ষা না দিলেই নয়।তখন আলামিন বললো তুমি নাকি আমাকে পাত্তাই দিবে না। আর তখনি বাজি টা করলাম আলামিন এর সাথে ২৫০০০ টাকা। আর সেটার ২০% মানে ৫০০০ টাকার বাজি করতে বললাম রুনা কে তোমার সাথে। রুনা ও তাই করলো। আর আমিও তোমার ন্যাকু ন্যাকু প্রেম সহ্য করলাম ১সপ্তাহ। আর হ্যা তুমি নাকি কখনো হারো নাই??? হারতে শিখো আজ থেকে, হারের একটা আলাদা মজা আছে।


নিরুপমা জীবনে প্রথম কোন বাজিতে হেরে বাসায় গেল।সারারাত ঘুম আসছে না।সে কখনোই হারতে পারে না।সে তার হার টা মেনে নিতে পারছে না।তাকে জিততেই হবে যেভাবেই হোক। এখন জিততে হলে একটাই কাজ আছে সেটা হল নিলয়ের সাথে ব্রেক আপ না করা। কিন্তু সেটা সে আজকেই সবার সামনে করছে। তাই এটা সম্ভব না। কিন্তু করবে কি সে নিলয়ের কাছে তার হার টা মেনে নিতে পারছে না কিছুতেই।

অবশেষে নিরুপমা একটা চরম সিন্ধান্তে উপনিত হল।যা কারো কল্পনাতেও আসতে পারে না শুধু মাত্র একটা বাজি জেতার জন্য। না না একটা নয় ২টা বাজি জিতবে সে যদি এইকাজ টা করতে পারে।


প্রথমত... সে কাল কে নিলয় কে বিয়ে করবে জোর করে রাজি করিয়ে হলেও। প্রয়োজন হলে সুইসাইড এটেম্প করবে। নিলয় কে বিয়ে করলে তাদের ব্রেক আপ হলো না মানে নিরুপমা জিতে গেল বাজি টা।


দ্বিতীয়ত... নিলয় আম্মুর পছন্দ করা গাইয়ার থেকে অনেক ভালই আছে। সো নিলয় কে বিয়ে করলে ওই গাইয়ার সাথে বাজি তে জিতবে। হানিমুন খরচ টা তার কাছে উসুল করবে।


যেই ভাবা সেই কাজ। পরের দিন নিরুপমা ক্যাম্পাসে গিয়ে নিলয়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে সবার সামনে নিলয় কে বললো তাকে বিয়ে করতে। নিলয় বললো অসম্ভব আমি তোমার মত মেয়ে কে কখনোই বিয়ে করবো না। তখন নিরুপমা নিলয়ের হাত ছেড়ে দিয়ে সবার সামনেই দৌড়ে ৫ তলা ভবনের উপর উঠে চিতকার করে বলতে লাগলো সবার উদ্দেশে নিলয় তাকে আজকেই বিয়ে না করলে সে সুইসাইড করবে। কিছুক্ষন এর মধ্যেই পুরো ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী উপস্থিত হলো সেখানে। আর সবার নিরুপমার জেদ সম্পর্কে ভালই ধারনা আছে। তাই সবাই নিলয় কে হাত জোর করে হলেও বিয়েতে রাজি করিয়ে কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে টা দিল...


কাজি অফিস থেকে বের হয়েই নিরুপমার মুখে প্রথম কথা ছিল.... বাজি টা আমিই জিতলাম আর তুমি হারলে। ব্রেক আপ আর হলো না। নিরুপমা কখনো কোন বাজিতে হারে না মাইন্ড ইট.... নিলয় বেচারা অবাক হবে নাকি শকড হবে কিছুই বুঝতেছে না। একটা মেয়ে শুধু মাত্র একটা ৫০০০টাকার বাজির জন্য একটা ছেলে কে সুইসাইডের ভয় দেখিয়ে রাজি করিয়ে বিয়ে করতে পারে বলে তার ধারনার বাইরে ছিল। তাই আপাতত নিলয় কিছুই বললো না।


নিরুপমার বিয়ের খবর টা এতক্ষনে তার আব্বু আম্মু ও জানতে পেরেছেন।প্রথমে রাগ হলেও পরে পুরো ব্যাপার টা জানতে পেরে মেনে নিয়েছেন তাই নিলয় কে নিয়েই নিরুপমা কে বাসায় যেতে বলছে।সন্ধ্যার দিকে নিরুপমা নিলয় কে নিয়ে তাদের বাসায় আসলো। এসে দেখে বাড়িতে মোটামুটি একটা বিয়ের আমেজ এসেছে।বাড়িতে কিছু আত্বীয়রাও এসেছে, যাদের কাউকে চেনা আবার কেউ কেউ অচেনা।নিরুপমার সেগুলোতে কোন খেয়াল নেই।তার চিন্তা হল সে এক বারে ২টা বাজি জিতেছে এবং তাকে কেউ কখনো কোন বাজিতে হারাতে পারে নি। ..

রাত ১২ টা....

নিরুপমার ঘরে বাসর সাজানো হয়েছে তাদের।নিরুপমা খাটের উপর বসে আছে। নিলয় আসলো রুমে।নিলয় বেচারার মন খারাপ।নিরুপমা যদিও বাজি জেতার জন্য নিলয় কে বিয়ে করেছে কিন্তু এমনিতে নিলয় কে তার খারাপ লাগে না।দেখতে শুনতে ভাল ব্রিলিয়ান্ট, হ্যান্ডসাম, অনেক মেয়ের ক্রাশ, স্বামী হিসেবে এমন ছেলেই চায় মেয়েরা।তাই নিরুপমা মনে মনে নিলয় কে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছে। নিলয় নিরুপমার রুমের বারান্দায় গিয়ে বসলো মন খারাপ করে। .

হঠাত নিরুপমার মনে হল গাইয়া টাকে বলা দরকার যে সে অন্য একটা ছেলে কে বিয়ে করেছে & কয়েক দিন এর মধ্যেই হানিমুনে যাবে। তাই হানিমুনে যাওয়ার টাকা টা রেডি রাখো। নিরুপমা ফোন দিতেই গাইয়া টা ফোন রিসিভ করলো। নিরুপমা তো এক নিশ্বাসে সব বলে ফেললো।

নিরুপমা:আমি কিন্তু পরের সপ্তাহে হানিমুনে যাবো।


ছেলেটি: সেটা তো হবে না। মুই তো পরের সপ্তাতে হানিমুন যাবার পাইম না।মোর ফাস্ট সেমিস্টার এর ফাইনাল পরীক্ষা আছে।


নিরুপমা: আপনি কেন যাবেন? আপনি বাজির টাকা দিবেন আমি আমার স্বামী কে নিয়ে হানিমুনে যাবো।


ছেলেটি:টাকা না হয় দিলাম কিন্তু স্বামীকে ছাড়া হানিমুনে কিভাবে যাবে [ ফোন কানে ধরে বলতে বলতে নিলয় রুমে আসলো।]


এসে নিরুপমার সামনে বসে বললো স্বামী কে ছাড়া কি হানিমুনে যাওয়া যায়? নিরুপমা তো অবাক? আমি এতক্ষন কার সাথে কথা বলছিলাম। আর এতক্ষন তো গাইয়া টা আঞ্চলিক ভাষাতেই কথা বলছিল আর এখন এত সুন্দর করে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলছে কি করে? তখন দেখলো কথা গুলো মোবাইল থেকে নয় সামনে থেকে আসছে।তখন নিলয় বললো চুল ভেজা আছে?? ভেজা চুল দিয়ে পা মুছানোর কথা ছিল!!!!!!!!..


নিরুপমা হা করে অবাক হয়ে বললো, নিলয় তার মানে তুমি আম্মু বান্ধবীর ছেলে??

নিলয় বললো, বলেছিলাম আমাকে বিয়ে করার জন্য পাগল হবা, সুইসাইড ও করতে চাইবা... করেছো। বলেছিলাম তোমাকেই বিয়ে করবো...করেছি। এখন থেকে প্রতিদিন ভেজা চুল দিয়ে সকাল আর রাতে পা মুছে দিবা। নিরুপমা বললো সব করবো আগে বলো এতসব করলে কি করে?


নিলয় বললো, যেদিন তোমার আম্মু তোমার সম্পর্কে আমাকে বলে সেদিনই বুঝেছিলাম তুমি কক্ষনো কোথাও হারো নি। তাই এমন জেদি আর বদমেজাজি হয়েছো। আমি চাইলে তোমার সাথে মিট করে কথা বলেই বিয়ে টা করতে পারতাম। কিন্তু সেটা করলে তোমার জেদি আর বদমেজাজি  অভ্যাস টা থেকেই যেত।তাই সেটা না করে তোমার আম্মুর কাছ থেকে তোমার নাম্বার টা নিয়ে ফোন এ রাখলাম।আর প্লান করলাম কিভাবে তোমাকে ঠিক করা যায়। আর তুমি যেদিন তোমার আম্মুর কাছে আমার নাম্বার নিছো তখনি আন্টি আমাকে বলে দিছে।আর আমিও তোমাকে খেপিয়ে দিয়ে বিয়ে না করার বাজি করালাম। কারন আমি জানতাম

বাজির কথা বললেই তুমি রাজি হবে, তারপর ভার্সিটি তে এডমিশন। প্লান মতই সব হল আর তুমি বিয়েও করলে।


তার মানে তুমি সব গুলো বাজি জিতলা???? নিরুপমা বললো। আমাকে কি সত্যি সত্যি তোমার পা ভেজা চুল দিয়ে মুছে দিতে হবে??. নিলয় বললো না হবে না।তুমি সব সময় আমার বুকে থাকবা।আর হ্যা আরো একটা বাজি জিতেছি।সেটা হলো আমার স্বশ্বুর আব্বার কাছে। সেটা হল আমি যদি ওনার মেয়ে কে ওনার মেয়ের ইচ্ছাতেই বিয়ে করতে পারি তাহলে হানিমুন এর বাজেট উনি দিবেন সেটা নিরুপমা যেখানে যেতে চাইবে......


তো নিরুপমা বাজিতে নাকি সব সময় জিতে যাও কখনো হারাতে পারে নি কেউ। এখন তো দেখছি একটা বাজিও জিততে পারলে না। নিরুপমা:কে বললো আমি বাজি জিতি নি...


নিলয়:কোথায় জিতলা বাজি?


নিরুপমা: আমি বাজিতে জিতেনিলাম সেই মানুষ টাকে যার কাছে হাজার বার বাজিতে হেরে যেতেও শান্তি আছে।সেই মানুষ টাই

আমার সব থেকে বড় বাজি জেতা।.....

আর সেটা আমার গাইয়া খ্যাত নিলয়.....


নিলয়: তাই নাকি?? তাহলে চল এখন বিছানায় তোমাকে হারিয়ে দিয়ে জিতিয়ে দেই আবার।


নিরুপমা: ইশ রে শখ কত... আগে ভাল করে প্রোপোজ কর.... তারপর ভাববো......


নিলয়: বউকে বাসর রাতে প্রপোজ করা লাগবে? পারবো না..


নিরুপমা: পারতেই হবে... জোর করে প্রপোজ করাবো।


নিলয়: পারবা না প্রপোজ করাতে বাজি কর....


নিরুপমা: ওকে বাজি ........ বলো কি বলবে না?


নিলয়: I LOVE YOU...


নিরুপমা: হেরে গেছে হেরে গেছে… প্রপোজ করেছো...


নিলয় : না না করি নি এমনি বলছি ওটা.....



এভাবেই চলতেই থাকবে বাজি..... একজন হেরেও জিতে যাবে আর একজন অন্য জন কে জিতিয়ে দিয়ে জিতে যাবে সেই মানুষ টাকে যার মুখে জিতের হাসিটা পৃথিবীর সব কিছুর থেকেও বেশি মুল্যবান.....


চলুক তাদের খুনশুটির ভালবাসা......


from Tuneshut https://ift.tt/3fe87EQ
bangla,bangla tech,bangla tech s,bangla news,bangla tutorial,tech bangla it,tech bangla,bangla tech channel exposed,tech bangla pro,bangla tech channel roasted video,bangla tv channel,bangla channels,in bangla,bangla movie,bangla news 24,bangla review,bangla boy,news bangla,new tech,tech,tyag bangla movie,shaj tech,news bangla 24,debtech bangla channel,like app bangla,bangla android,bangla tutorial idm, bangla,bangla funny video,bangla movie,bangla new movie,funny facebook posts,new bangla funny video,funniest facebook posts,post office,bangla natok,bangla movie song,bangla facebook post,bangla tutorial,new bangla natok,bangla full movie,bangla cinema,bangla dhadha,bangla natok post mortem,bangla funny facebook post,bangla motivational video,bangla facebook funny,facebook post,facebook funny post, Credit Tuneshut -

source https://www.bangla-hacking.xyz/2020/05/blog-post.html

source https://www.bangla-hacking.xyz/2020/05/blog-post_1.html

source https://www.bangla-hacking.xyz/2020/05/blog-post_64.html

source https://www.bangla-hacking.xyz/2020/05/blog-post_16.html